সাহিত্যিক শিল্প ও সংগীত ব্যক্তিত্ব

সাহিত্যিক, শিল্পী ও সংগীত ব্যক্তিত্ব হল এমন ব্যক্তিত্ব যারা তাদের কাজের মাধ্যমে সাহিত্য, শিল্প ও সংগীতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এই ব্যক্তিত্বরা তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজে একটি গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম।

সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বরা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কাজ করতে পারেন, যেমন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, ইত্যাদি। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা ও বিষয়ের আলোকপাত করতে পারেন।

শিল্পী ব্যক্তিত্বরা বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারেন, যেমন চিত্রকলা, ভাস্কর্য, সঙ্গীত, নৃত্য, ইত্যাদি। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে মানুষের মনের সৌন্দর্য ও কল্পনাকে জাগ্রত করতে পারেন।

সংগীত ব্যক্তিত্বরা বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত তৈরি করতে পারেন, যেমন লোকসঙ্গীত, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, আধুনিক সঙ্গীত, ইত্যাদি। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে মানুষের মনের অনুভূতিকে প্রকাশ করতে পারেন।

বাংলাদেশের সাহিত্য, শিল্প ও সংগীতের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব অবদান রেখেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:

  • সাহিত্য: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রমথ চৌধুরী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ুন আহমেদ, আহমদ ছফা, ইত্যাদি।
  • শিল্প: আব্দুল গনি, কামরুল হাসান, সৈয়দ হায়দার আলী, মোহাম্মদ ফকির, নন্দলাল বসু, জয়নুল আবেদিন, আব্দুল খালেক, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইত্যাদি।
  • সংগীত: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, আব্দুল করিম খাঁ, তালেবউদ্দীন খাঁ, আলাউদ্দিন খাঁ, ভীষ্মদেব চৌধুরী, সলিল চৌধুরী, আহমেদ হোসেন দানেশ, ইত্যাদি।

এই ব্যক্তিত্বরা তাদের কাজের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাদের অবদান বাংলা জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংগীত মানব চিত্রে বিনোদন সৃষ্টি করতে সক্ষম এক ধরনের প্রবণযোগ্য কলা কৌশল। সংগীতে সৃষ্টি হয় স্বর ও ধ্বনির সংমিশ্রণে।

তবে সকল ক্ষেত্রে ধ্বনির প্রধান বাহন সুর। মূলত গীত বাদ্য নৃত্য এই তিনটি বিষয়ে সমাহারকেই সংগীত বোঝায়।

ত্রতালঃ একটি তাল কয়েকটি ছন্দোবদ্ধ মাত্রার সমষ্টি। শাস্ত্রীয় সংগীতে বহুল ব্যবহৃত তালের মধ্যে একটি হচ্ছে ত্রিতাল।

তিনটি তালি ও একটি ফাঁক এর কারণে এটি তিন তাল বা ত্রিতাল। এটি ষোল মাত্রার সমপদী একটি তাল।

বাদ্যযন্ত্রঃ বাংলাদেশের সংগীত বাণী প্রধান, এখানে বাদ্যযন্ত্রের ভূমিকা সামান্য। আমাদের দেশীয় সংগীতের সাথে বাদ্যযন্ত্র হিসেবে সাধারণত হারমোনিয়াম এক তারা দোতারা ঢোল বাসি ডুগডুগি সারিন্দা ইত্যাদি। ব্যবহার করা হয়ে থাকে।  

এ ছাড়া খোল বাদল করতাল মন্দিরা  কোন  খঞ্জনি ইত্যাদি ও লোকজ বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে আধুনিক সংগীতকাররা বিদেশি বাদ্যযন্ত্র যেমন কিবোর্ড ড্রামস গিটার ইত্যাদি ব্যবহার করেন। 

 তানপুরাঃতানপুরা বাদ্যযন্ত্র হিসেবে পরিচিত এক ধরনের তারযন্ত।  তানপুরা তৈরি করা হয় সেতারের মতো দেখতে লাউয়ের কোন বার উপরে একটি ডান্ডি যুক্ত করে এবং তাতে চারটি তার লাগিয়ে।

এ অঞ্চলে তানপুরা মূলত উচ্চাঙ্গ সংগীতের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দক্ষিণ ভারতের তাম্বুরা এবং অন্যান্য অঞ্চল বাংলাদেশের একটি তানপুরা নামে পরিচিত।

স্বরঃটঙ্গীতে সা রে গা মা পা ধা নি সা এই কয়টি কেই স্বর বলা হয়। স্বর দুই প্রকার। যথা প্রকৃত শুদ্ধ এবং বিকৃত কোমল ও তির।

প্রকৃত স্বর সাতটি এবং  বিকৃত স্বর পাঁচটি। এই দুই প্রকার স্বর বারটি।শুদ্ধ স্বরঃ সা রে গা মা পা ধা নি।বিকৃত  বিকৃত স্বরঃ কোমল- :-রে গা মা  কড়ি কমল  ধা কোমল নি।

 

লোক সংগীত

আবহমান কাল থেকে বাংলার গ্রামগঞ্জ মুখর হয়েছে জারি। বাউল ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া মন্দিরা ইত্যাদি সুরে। এগুলোই আমাদের প্রধান  লোকগান।

গ্রামের মেলায় যাত্রাগান পালাগান  কবিগান কীর্তনগান মুর্শিদিগান  ইত্যাদি আসর বসে। ব বাউল শব্দ থেকে যার অর্থ হচ্ছে বাতুল অথবা পাগল।

বাউল একটি বিশেষ লোকাচার এবং ধমর্মত। এই মতে সৃষ্টি হয়েছে বাংলার মাটিতে। বাউলদের সাদামাটা কৃসচসাধনার জীবন এবং এত তারা বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস।

বাউলেরা উদার  ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মসাগর। বাউলরা কখনো রীতিবন্ধনের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে চান না। তারা সংসার ত্যাগী মুক্তপুরুষ।

তারা মানবতার বাণী প্রচার  করে। বাউল মতে ব্যঞ্জবধর্ম এবং সুফিদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বাউরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় আত্মাকে।

তাদের মতে আত্মাকে জানলেই পর মাত্রা বা সৃষ্টিকর্তাকে জানা যায়। আত্মা দেহে বাস করে বলে তারা দেহকে পবিত্র জ্ঞান করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *