হাকালুকি হাওর

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর। এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, কুলাউড়া, এবং সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার জুড়ে বিস্তৃত।

হাকালুকি হাওরের নামকরণ নিয়ে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। কথিত আছে, বহু বছর আগে ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে বড়লেখার কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘লুকি দেয়’ অর্থাৎ লুকিয়ে থাকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কালক্রমে ওই এলাকার নাম হয় ‘হাঙ্গর লুকি বা হাকালুকি’।

এও বলা হয়, প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রচন্ড এক ভূমিকম্পে ‘আকা’ নামে এক রাজা ও তার রাজত্ব মাটির নিচে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। কালক্রমে এই তলিয়ে যাওয়া নিম্নভূমির নাম হয় ‘আকালুকি বা হাকালুকি‘। আরো প্রচলিত যে, এক সময় বড়লেখা থানার পশ্চিমাংশে ‘হেংকেল’ নামে একটি উপজাতি বাস করতো।

পরবর্তিতে এই ‘হেংকেলুকি’ হাকালুকি নাম ধারণ করে। এও প্রচলিত যে, হাকালুকি হাওরের কাছাকাছি একসময় বাস করতো কুকি, নাগা উপজাতিরা। তাদের নিজস্ব উপজাতীয় ভাষায় এই হাওরের নামকরণ করা হয় ‘হাকালুকি’, যার অর্থ ‘লুকানো সম্পদ’।

হাকালুকি হাওর একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্থান। বর্ষাকালে হাওরটি বিশাল জলরাশিতে ভরে ওঠে। এ সময় হাওরের চারপাশের সবুজ পাহাড় ও বনভূমি এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করে।

হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বিলগুলোতে নানা প্রজাতির মাছ, জলচর পাখি ও অন্যান্য প্রাণী বাস করে। হাওরটি পরিযায়ী পাখিদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতি বছর শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী পাখি হাকালুকি হাওরে এসে আশ্রয় নেয়।

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। হাওরের পানি সেচের কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও হাওরের মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, বাইম, শিং, মাগুর, ভেটকি, রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা ইত্যাদি মাছ ধরে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। হাওরের বনভূমি থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঠ, বনজ সম্পদ ও ওষুধি গাছপালা সংগ্রহ করা হয়।

হাকালুকি হাওর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটক হাকালুকি হাওর ভ্রমণে আসেন। হাওরে নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, ঘোড়ায় চড়া, পাখি দেখা ইত্যাদি activities জনপ্রিয়।

হাকালুকি হাওরের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হাওরের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করে এর জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

হাওরের পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন প্রণয়ন করা হয়েছে। হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের এক অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্থান। এর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন আমাদের সকলের দায়িত্ব।

হাকালুকি সম্পর্কিত কিছু তথ্য

হাকালুকি হাওর সম্পর্কিত কিছু তথ্য:

    • অবস্থান: মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার বড়লেখা, কুলাউড়া, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত।
    • আয়তন: ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর।
    • নামকরণ: হাকালুকি হাওরের নামকরণ নিয়ে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। কথিত আছে, বহু বছর আগে ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে বড়লেখার কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘লুকি দেয়’ অর্থাৎ লুকিয়ে থাকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কালক্রমে ওই এলাকার নাম হয় ‘হাঙ্গর লুকি বা হাকালুকি’।
    • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: হাকালুকি হাওর একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্থান। বর্ষাকালে হাওরটি বিশাল জলরাশিতে ভরে ওঠে। এ সময় হাওরের চারপাশের সবুজ পাহাড় ও বনভূমি এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করে।
    • জীববৈচিত্র্য: হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বিলগুলোতে নানা প্রজাতির মাছ, জলচর পাখি ও অন্যান্য প্রাণী বাস করে। হাওরটি পরিযায়ী পাখিদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতি বছর শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী পাখি হাকালুকি হাওরে এসে আশ্রয় নেয়।
    • অর্থনৈতিক গুরুত্ব: হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। হাওরের পানি সেচের কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও হাওরের মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, বাইম, শিং, মাগুর, ভেটকি, রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা ইত্যাদি মাছ ধরে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। হাওরের বনভূমি থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঠ, বনজ সম্পদ ও ওষুধি গাছপালা সংগ্রহ করা হয়।
  • পর্যটন কেন্দ্র: হাকালুকি হাওর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটক হাকালুকি হাওর ভ্রমণে আসেন। হাওরে নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, ঘোড়ায় চড়া, পাখি দেখা ইত্যাদি activities জনপ্রিয়।

হাকালুকি হাওরের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হাওরের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করে এর জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। হাওরের পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন প্রণয়ন করা হয়েছে। হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

নামকরণ

হাকালুকি হাওর নামকরণ নিয়ে নানা জনশ্রুতি রয়েছে।

    • প্রথম জনশ্রুতিতে বলা হয়, বহু বছর আগে ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে বড়লেখার কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘লুকি দেয়’ অর্থাৎ লুকিয়ে থাকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কালক্রমে ওই এলাকার নাম হয় ‘হাঙ্গর লুকি বা হাকালুকি’।

    • দ্বিতীয় জনশ্রুতিতে বলা হয়, এক সময় বড়লেখা থানার পশ্চিমাংশে ‘হেংকেল’ নামে একটি উপজাতি বাস করতো। তাদের বসবাস এলাকার নাম ছিল ‘হেংকেলুকি’। পরবর্তিতে এই ‘হেংকেলুকি’ হাকালুকি নাম ধারণ করে।

    • তৃতীয় জনশ্রুতিতে বলা হয়, হাকালুকি হাওরের কাছাকাছি একসময় বাস করতো কুকি, নাগা উপজাতিরা। তাদের নিজস্ব উপজাতীয় ভাষায় এই হাওরের নামকরণ করা হয় ‘হাকালুকি’, যার অর্থ ‘লুকানো সম্পদ’।

এই জনশ্রুতিগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে, হাকালুকি হাওরের নামকরণ নিয়ে এগুলোই সবচেয়ে প্রচলিত।

হাকালুকি হাওরের গুরুত্ব

হাকালুকি হাওরের গুরুত্ব

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এর গুরুত্ব নিম্নরূপ:

  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য: হাকালুকি হাওর একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্থান। বর্ষাকালে হাওরটি বিশাল জলরাশিতে ভরে ওঠে। এ সময় হাওরের চারপাশের সবুজ পাহাড় ও বনভূমি এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করে।
  • জীববৈচিত্র্য: হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বিলগুলোতে নানা প্রজাতির মাছ, জলচর পাখি ও অন্যান্য প্রাণী বাস করে। হাওরটি পরিযায়ী পাখিদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতি বছর শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী পাখি হাকালুকি হাওরে এসে আশ্রয় নেয়।
  • অর্থনৈতিক গুরুত্ব: হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। হাওরের পানি সেচের কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও হাওরের মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, বাইম, শিং, মাগুর, ভেটকি, রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা ইত্যাদি মাছ ধরে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। হাওরের বনভূমি থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঠ, বনজ সম্পদ ও ওষুধি গাছপালা সংগ্রহ করা হয়।
  • পর্যটন কেন্দ্র: হাকালুকি হাওর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটক হাকালুকি হাওর ভ্রমণে আসেন। হাওরে নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, ঘোড়ায় চড়া, পাখি দেখা ইত্যাদি activities জনপ্রিয়।

হাকালুকি হাওরের সংরক্ষণ

হাকালুকি হাওর একটি সংরক্ষণযোগ্য সম্পদ। এর সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • হাওরের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করে এর জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো।
  • হাওরের পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন প্রণয়ন করা।
  • হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।

হাকালুকি হাওরের সংরক্ষণ আমাদের সকলের দায়িত্ব।

উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য

হাকালুকি হাওরে প্রায় ৫২৬ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • জলজ উদ্ভিদ: হিজল, করচ, বরুণ, পানিফল, হেলেঞ্চা, বল্লুয়া, চাল্লিয়া, কচুরিপানা, শ্যাওলা ইত্যাদি।
  • স্থলজ উদ্ভিদ: বনতুলসী, বনজঙ্গল, জারুল, তেঁতুল, আম, জাম, কাঁঠাল, তাল, সুপারি, খেজুর ইত্যাদি।

জীববৈচিত্র্য

হাকালুকি হাওরে প্রায় ৪১৭ প্রজাতির পাখি, ১৪১ প্রজাতির অনান্য বন্যপ্রাণী এবং ১০৭ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • পাখি: সাদা বক, নীল বক, কালো বক, ময়না, টিয়া, কোকিল, ঘুঘু, বাজপাখি, শকুন, ঈগল, টিকটিকি, ইত্যাদি।
  • অন্যান্য বন্যপ্রাণী: হরিণ, বন্য শুকর, বানর, সজারু, কচ্ছপ, কুমির, ইত্যাদি।
  • মাছ: রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা, শিং, মাগুর, ভেটকি, বাইম, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি।

হাকালুকি হাওর পরিযায়ী পাখিদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতি বছর শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী পাখি হাকালুকি হাওরে এসে আশ্রয় নেয়।

হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • হাওরকে রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
  • হাওরের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করে এর জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
  • হাওরের পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন প্রণয়ন করা হয়েছে।
  • হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *