বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সংক্ষেপে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল এবং ২০০৯ সাল থেকে দেশের ক্ষমতাসীন দল। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী প্রধানতম দল।

আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠার সময় দলের সভাপতি ছিলেন হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক।

আওয়ামী মুসলিম লীগ পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বাংলা বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই রাজনৈতিক দলটি খুব দ্রুত পূর্ব পাকিস্তানে জনপ্রিয়তা অর্জনে সমর্থ হয়। ঘটনাক্রমে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে সংগ্রামে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের পক্ষে একটি সক্রিয় সংগঠন হিসাবে নেতৃত্বে দিতে থাকে।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করে। এই সরকারের প্রধান ছিলেন আতাউর রহমান খান।

১৯৫৫ সালের তৃতীয় কাউন্সিল সভায় ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হিসেবে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয় যাতে অমুসলিমরাও দলে যোগ দেয়ার সুযোগ পান। দলের নাম পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ নির্ধারণ করা হয়।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালিদের উপর গণহত্যা চালায়।

এই গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালিরা যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ প্রথমে ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এবং পরে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সরকার গঠন করে।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল। দলের সভাপতি হলেন শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক হলেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে:

    • হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী
    • শামসুল হক
    • আবদুল হামিদ খান ভাসানী
    • শেখ মুজিবুর রহমান
    • সোহরাওয়ার্দী
    • কামাল হোসেন
    • জিল্লুর রহমান
    • শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের আদর্শ ও লক্ষ্য:

    • ধর্মনিরপেক্ষতা
    • গণতন্ত্র
    • সমাজতন্ত্র
    • জাতীয়তাবাদ

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি:

    • গণতন্ত্রের বিকাশ
    • সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন
    • জাতীয়তাবাদের সমুন্নত রক্ষা

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দান করেছে এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সরকার গঠন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল এবং ২০০৯ সাল থেকে দেশের ক্ষমতাসীন দল। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী প্রধানতম দল।

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মোট ১০টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৯টি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০টি আসন লাভ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩১টি আসন লাভ করে এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসন লাভ করে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।

আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। দলটি দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে:

    • দারিদ্র্য বিমোচন: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দারিদ্র্য হার ১০ দশমিক ৪% থেকে ২১ দশমিক ৮%-এ নেমে এসেছে।
    • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষার হার ৫৫% থেকে ৭৫%-এ এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার আওতায় জনসংখ্যার হার ৭০% থেকে ৯০%-এ বেড়েছে।
    • নারীর ক্ষমতায়ন: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারীর ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নারীর শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
    • অবকাঠামো উন্নয়ন: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। নতুন নতুন সড়ক, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর নলকূপ, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ইত্যাদি নির্মিত হয়েছে।
    • গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাধীনতা, নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের এই অর্জনগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দলটি দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

ছয় দফা আন্দোলন

ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলন। ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “৬ দফা দাবি” পেশ করেন।

ছয় দফার মূল দাবিগুলো হল:

    • পাকিস্তানে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন, যার দুটি রাষ্ট্র হবে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান।
    • কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়।
    • পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব সরকার থাকবে, যার হাতে থাকবে আইন, শৃঙ্খলা, অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য স্থানীয় বিষয়।
    • পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব মুদ্রা থাকবে।
    • পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব বাহিনী থাকবে।
    • পূর্ব পাকিস্তানের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য পূর্ব পাকিস্তানের হবে।

ছয় দফা দাবি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। আওয়ামী লীগ ছয় দফা বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হক, মুজিবুল হকসহ মোট ১১ জন বাঙালি নিহত হন।

ছয় দফা আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধিকারের চেতনা বৃদ্ধি পায় এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে।

ছয় দফা আন্দোলনের ফলাফল:

    • ছয় দফা আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধিকারের চেতনা বৃদ্ধি পায়।
    • ছয় দফা আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে।
    • ছয় দফা আন্দোলনের ফলে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
    • ছয় দফা আন্দোলনের ফলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে।

ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলন

একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলন হল ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সংঘটিত একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।

একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি:

উনিশ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশ শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নামে দুটি প্রদেশের সমন্বয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানে জনসংখ্যার সংখ্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় বেশি হলেও, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল।

১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি পেশ করা হয়। ছয় দফা দাবি পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছিল। ছয় দফা দাবি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রত্যাখ্যাত হলে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণআন্দোলন শুরু হয়।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর গণহত্যা শুরু হয়। এই গণহত্যার প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ:

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল একটি সশস্ত্র যুদ্ধ। এই যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে। যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল:

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে।

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রভাব:

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ববাসী বুঝতে পারে যে, কোনো জাতি তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কতটা সাহসী হতে পারে।

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং বিশ্ব মানচিত্রে তার স্থান করে নেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *