বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বাংলা রচনা

 জন্ম ও পরিচয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ (৩রা চৈত্র ১৩২৭ বঙ্গাব্দ) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের বাইগার নদী তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিচয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা, প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান নেতা। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশকে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রে নিহত হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের জন্য তিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে পরিচিত। তার জন্মদিন, ১৭ই মার্চ, বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।

শিক্ষাজীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তিনি স্থানীয় পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৩০ সালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৩৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।

এরপর তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৪০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৪৬ সালে এলএলবি পাস করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৪২ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষাজীবন ছিল সংগ্রামী। তিনি কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও তার শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র এবং ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের প্রধান পর্যাবসমূহ নিম্নরূপ:

  • ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে সক্রিয়তা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৪২ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
  • পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ: ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।
  • রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব: ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে ঘোষণা করা হলে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এই আন্দোলনে নিহত হন সালাম, রফিক, জব্বার ও শফিক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণআন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
  • দুর্ভিক্ষবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব: ১৯৫০ সালে পূর্ব পাকিস্তানে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এই দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি দুর্ভিক্ষের শিকার মানুষের জন্য সাহায্যের আবেদন জানান।
  • ৬ দফা আন্দোলনের নেতৃত্ব: ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এই দাবিগুলো ছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। ৬ দফা আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে গণআন্দোলনের সূচনা করে।
  • ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব: ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানে গণঅভ্যুত্থান ঘটে। এই গণঅভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ছিল অপরিহার্য। তিনি গণঅভ্যুত্থানের নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন।
  • ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়: ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়।
  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব: ১৯৭১ সালে পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন।
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও প্রতিষ্ঠা: ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নবগঠিত বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী, সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান নেতা। তিনি ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী ও সাহসী নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য পূর্ব পরিকল্পনা করেন এবং যুদ্ধের সফলতা অর্জনের জন্য সকল দিক থেকে চেষ্টা করেন।

মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিম্নরূপ:

  • গণজাগরণ ও প্রস্তুতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে গণজাগরণ ও প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য নির্দেশ দেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন।
  • সরকার গঠন: ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন। এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়।
  • বিদেশী সাহায্য: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশী দেশ ও সরকারের কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে যোগাযোগ করেন এবং ভারতের কাছ থেকে সামরিক ও অন্যান্য সাহায্য লাভ করেন।
  • মুক্তিবাহিনী গঠন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে।
  • সাহস ও উৎসাহ প্রদান: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সাহস ও উৎসাহের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি উদ্দীপনা ও লড়াইয়ের স্পৃহা জোগাতে থাকেন।

মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অপরিহার্য। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস শুরু হয় ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে। পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণ নানাবিধ বৈষম্য ও শোষণের শিকার হতে থাকে। এই বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে গণআন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনকে দমন করার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর নিরস্ত্র গণহত্যা চালায়। এই গণহত্যার ফলে বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা আরও প্রবল হয়ে ওঠে।

২৬ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে। এই মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ করে।

৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে আবির্ভূত হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ফলে বাঙালি জাতি একটি নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করে। এই স্বাধীনতা লাভের জন্য অসংখ্য বাঙালি জীবন উৎসর্গ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের কারণসমূহ নিম্নরূপ:

  • পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণ নানাবিধ বৈষম্য ও শোষণের শিকার হতে থাকে।
  • ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
  • ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর নিরস্ত্র গণহত্যা চালায়।
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে।
  • ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ফলাফলসমূহ নিম্নরূপ:

  • বাঙালি জাতি একটি নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করে।
  • বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যায়।
  • বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের গুরুত্ব অপরিসীম। এই স্বাধীনতা লাভের মাধ্যমে বাঙালি জাতি একটি নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রতিষ্ঠা করে। এই স্বাধীনতা লাভের ফলে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে এই স্বাধীনতা লাভের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরস্ত্র বাঙালি জনগণের উপর চালানো গণহত্যা। এই গণহত্যার ফলে প্রায় ৩০ লাখ বাঙালি নিহত হয়।

এই গণহত্যা ছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তার পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের একটি কূটনৈতিক কৌশল। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা মনে করেছিল যে, নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর নির্মম গণহত্যা চালিয়ে তারা বাঙালিদের ভীত করে তুলতে পারবে এবং তাদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে পারবে।

২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর নির্মম গণহত্যা চালায়। তারা বাড়িঘর, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, মন্দির, সবখানেই নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করে। তারা নারী, শিশু, বৃদ্ধ, কেউ ছাড় পায়নি।

এই গণহত্যার প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে আবির্ভূত হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান নেতা। তিনি ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন এবং যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে একটি গণআন্দোলন হিসেবে শুরু হয়। এই গণআন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিশোধ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার নিন্দা করেন এবং তিনি বলেন যে, এই গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি কলঙ্ক।

সুতরাং, ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র বাঙালি জনগণের উপর চালানো গণহত্যা।

এই গণহত্যা ছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তার পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের একটি কূটনৈতিক কৌশল। এই গণহত্যার প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে।

৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে আবির্ভূত হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *