ইতিহাসের জনক কে?

ইতিহাস কি?

ইতিহাস হলো অতীতের ঘটনাবলীর লিখন, বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন। এটি অতীতের ঘটনাবলীর কালানুক্রমিক বিবরণ, যা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত হয়। ইতিহাসের উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে লিখিত নথি, মৌখিক ইতিহাস, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং অন্যান্য বস্তুগত প্রমাণ।

Image of ইতিহাসের উৎস

ইতিহাসের বিভিন্ন শাখা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক ইতিহাস, অর্থনৈতিক ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ইতিহাস এবং সামরিক ইতিহাস। ইতিহাসের প্রতিটি শাখা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

ইতিহাসের উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে অতীতকে বোঝা, বর্তমানকে ব্যাখ্যা করা এবং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা লাভ করা। ইতিহাস আমাদেরকে অতীতের ঘটনাগুলি সম্পর্কে জ্ঞান দেয়, যা আমাদের বর্তমান বিশ্বকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য সহায়ক।

এটি আমাদেরকে বর্তমান ঘটনাগুলির প্রসঙ্গে অতীতের ঘটনাগুলিকে ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে। এবং এটি আমাদেরকে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাগুলি সম্পর্কে শিক্ষা দেয়।

ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ এটি আমাদেরকে আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে জ্ঞান দেয়। এটি আমাদেরকে আরও সচেতন নাগরিক হতে এবং আমাদের বিশ্বকে আরও ভাল জায়গা করে তুলতে সহায়তা করে।

 ইতিহাস কত প্রকার ও কি কি?

ইতিহাসকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

  • ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস
  • বিষয়বস্তুগত ইতিহাস

ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস

এই শ্রেণিবিভাগে ইতিহাসকে ভৌগোলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:

  • স্থানীয় ইতিহাস
  • আঞ্চলিক ইতিহাস
  • জাতীয় ইতিহাস
  • আন্তর্জাতিক ইতিহাস

স্থানীয় ইতিহাস

কোনো নির্দিষ্ট স্থান বা এলাকার ইতিহাসকে স্থানীয় ইতিহাস বলে। যেমন, ঢাকার ইতিহাস, চট্টগ্রামের ইতিহাস, বাগেরহাটের ইতিহাস ইত্যাদি।

আঞ্চলিক ইতিহাস

ভৌগোলিকভাবে বিস্তৃত কোনো অঞ্চলের ইতিহাসকে আঞ্চলিক ইতিহাস বলে। যেমন, দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস, মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস, ইউরোপের ইতিহাস ইত্যাদি।

জাতীয় ইতিহাস

একই জাতির ইতিহাসকে জাতীয় ইতিহাস বলে। যেমন, বাংলাদেশি ইতিহাস, ভারতীয় ইতিহাস, চীনা ইতিহাস ইত্যাদি।

আন্তর্জাতিক ইতিহাস

বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যেকার ঘটনাবলীর ইতিহাসকে আন্তর্জাতিক ইতিহাস বলে। যেমন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস, শীতল যুদ্ধের ইতিহাস ইত্যাদি।

বিষয়বস্তুগত ইতিহাস

এই শ্রেণিবিভাগে ইতিহাসকে ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:

  • রাজনৈতিক ইতিহাস
  • সামাজিক ইতিহাস
  • অর্থনৈতিক ইতিহাস
  • সাংস্কৃতিক ইতিহাস
  • সাম্প্রতিক ইতিহাস

রাজনৈতিক ইতিহাস

রাজনীতি এবং সরকারের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাবলীর ইতিহাসকে রাজনৈতিক ইতিহাস বলে। যেমন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ফরাসি বিপ্লব ইত্যাদি।

সামাজিক ইতিহাস

সমাজের বিভিন্ন দিক, যেমন জনসংখ্যা, শ্রেণি, লিঙ্গ, ধর্ম, শিক্ষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত ঘটনাবলীর ইতিহাসকে সামাজিক ইতিহাস বলে। যেমন, নারীর অধিকার আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন, শিল্প বিপ্লব ইত্যাদি।

অর্থনৈতিক ইতিহাস

অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাবলীর ইতিহাসকে অর্থনৈতিক ইতিহাস বলে। যেমন, শিল্প বিপ্লব, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, আর্থিক সংকট ইত্যাদি।

সাংস্কৃতিক ইতিহাস

শিল্প, সাহিত্য, সংগীত, ভাষা, ধর্ম, দর্শন ইত্যাদি সাংস্কৃতিক বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত ঘটনাবলীর ইতিহাসকে সাংস্কৃতিক ইতিহাস বলে। যেমন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, ভারতীয় শিল্পের ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি।

সাম্প্রতিক ইতিহাস

বর্তমান সময়ের ঘটনাবলীর ইতিহাসকে সাম্প্রতিক ইতিহাস বলে। যেমন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাস, ভারতের স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাস, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের উত্থান ইত্যাদি।

এই শ্রেণিবিভাগগুলিকে একত্রে ব্যবহার করে ইতিহাসকে আরও বিস্তারিতভাবে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন, রাজনৈতিক ইতিহাসকে আবারও সামরিক ইতিহাস, কূটনৈতিক ইতিহাস, প্রশাসনিক ইতিহাস ইত্যাদিতে ভাগ করা যেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *