সূর্য সম্পর্কে কিছু সাধারণ তথ্য

সূর্য একটি কি

সূর্য একটি নক্ষত্র। নক্ষত্র হল মহাকাশের বিশাল গ্যাসের গোলক যা পারমাণবিক সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে। সূর্য আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং এটিই সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু, গ্রহাণু ইত্যাদির কেন্দ্রীয় শক্তির উৎস।

সূর্য প্রায় ৪.৬০৩ বিলিয়ন বছর বয়সী এবং এর ব্যাস প্রায় ১,৩৯২,৬৮৪ কিলোমিটার। সূর্যের ভর প্রায় ৩.৩৩ মিলিয়ন সৌর ভর। সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৫,৫০০ ডিগ্রি কেলভিন।

সূর্যের কেন্দ্রে প্রচণ্ড চাপ ও তাপমাত্রার কারণে হাইড্রোজেন পরমাণুগুলি পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই সংঘর্ষে হাইড্রোজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসগুলি পরস্পরের সাথে একত্রিত হয়ে হিলিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াস তৈরি করে। এই বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয়।

এই শক্তির কিছু অংশ সূর্যের পৃষ্ঠে পৌঁছে আলো হিসেবে নির্গত হয়। সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে নির্গত আলো সব ধরনের রঙের আলোর সমষ্টি। তবে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে আমরা সূর্যকে হলুদ, কমলা বা লাল রঙের দেখতে পাই।

সূর্যের আলো পৃথিবীতে এসে আমাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় তাপ ও আলো প্রদান করে। এছাড়াও, সূর্যের আলোর প্রভাবেই পৃথিবীতে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঘটে, যার মাধ্যমে উদ্ভিদরা খাদ্য তৈরি করে।

সূর্যের রঙ কি?

সূর্যের আসল রঙ হল সাদা। তবে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে আমরা সূর্যকে হলুদ, কমলা বা লাল রঙের দেখতে পাই।

সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে নির্গত আলো সব ধরনের রঙের আলোর সমষ্টি। এই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত। তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হলে আলোর রঙ নীল হয়, আর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে আলোর রঙ লাল হয়।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমানো হয় বেশি। তাই আমরা সূর্যকে হলুদ, কমলা বা লাল রঙের দেখতে পাই।

যদি আমরা মহাকাশ থেকে সূর্যকে দেখতে পারতাম, তাহলে আমরা সূর্যকে সাদা রঙের দেখতে পেতাম।

সূর্যের অপর নাম কি?

সূর্যের অনেক অপর নাম রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হল:

  • বিবস্বান
  • রবি
  • আদিত্য
  • পূষা
  • দিবাকর
  • সবিতা
  • অর্ক
  • মিত্র
  • ভানু
  • ভাস্কর
  • গ্রহপতি
  • মার্তণ্ড

এই নামগুলির প্রত্যেকটি সূর্যের বিভিন্ন গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্যকে বোঝায়। যেমন, বিবস্বান শব্দের অর্থ হল “সবার কর্তৃপক্ষ”, রবি শব্দের অর্থ হল “আগুনপাখি”, আদিত্য শব্দের অর্থ হল “অদিতির পুত্র”, পূষা শব্দের অর্থ হল “শ্রেষ্ঠ পাপনাশক”, দিবাকর শব্দের অর্থ হল “দিনের স্রষ্টা”,

সবিতা শব্দের অর্থ হল “উজ্জ্বলকারী”, অর্ক শব্দের অর্থ হল “রশ্মি”, মিত্র শব্দের অর্থ হল “বন্ধু”, ভানু শব্দের অর্থ হল “আলোক”, ভাস্কর শব্দের অর্থ হল “আলোকনির্মাতা”, গ্রহপতি শব্দের অর্থ হল “গ্রহের অধিপতি”, এবং মার্তণ্ড শব্দের অর্থ হল “সূর্যের রূপ”।

বাংলা সাহিত্যে সূর্যের আরও অনেক অপর নাম রয়েছে। যেমন, “ইতু” বা “ইতুপূজা” হল সূর্যের পূজা। এছাড়াও, “সূর্যপূজা” বা “সূর্যোৎপাতে” বা “সূর্যোদয়” শব্দগুলিও সূর্যের অপর নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *