ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৮৫৩ সালের ৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান ছিল ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশের খুলনা জেলার কুমিরা গ্রাম। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের আবিষ্কর্তা।

তাঁর আসল নাম ছিল শরৎনাথ ভট্টাচার্য। শৈশবে ‘হর’ বা শিবের পূজা দিয়ে জটিল অসুখ থেকে সেরে ওঠায় নাম বদলে রাখা হয় হরপ্রসাদ। পরবর্তী সময়ে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকারসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করায় ‘শাস্ত্রী’ উপাধি লাভ করেন।

ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন একজন বিখ্যাত বাঙালি শিক্ষাবিদ, গবেষক, বহুভাষাবিদ, পুঁথি-সংগ্রাহক-বিশ্লেষক-সম্পাদক, অনুবাদক, শিলালেখ ও তাম্রলিপির পাঠোদ্ধারকারী এবং ঐতিহাসিক। তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম ও দর্শন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। তার গবেষণাকর্ম বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছে।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি কী?

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি ছিল মহামহোপাধ্যায়। তিনি ১৮৯৬ সালে এই উপাধি লাভ করেন। এছাড়াও, তিনি ১৯১১ সালে সি.আই.ই. উপাধি লাভ করেন।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন একজন বিখ্যাত বাঙালি শিক্ষাবিদ, গবেষক, বহুভাষাবিদ, পুঁথি-সংগ্রাহক-বিশ্লেষক-সম্পাদক, অনুবাদক, শিলালেখ ও তাম্রলিপির পাঠোদ্ধারকারী এবং ঐতিহাসিক। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের আবিষ্কর্তা। তার গবেষণাকর্ম বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছে।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে কি কি পুঁথি সংগ্রহ করেছেন?

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে বিভিন্ন ধরনের পুঁথি সংগ্রহ করেছেন। তার সংগৃহীত পুথিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • চর্যাপদ: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগারে আবিষ্কার করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। ১৯০৭ সালে তিনি এই পুঁথিগুলি আবিষ্কার করেন এবং ১৯১৬ সালে “হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে প্রকাশ করেন।
  • সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতম্: সন্ধ্যাকর নন্দীর রচিত রামচরিতম্ বা রামচরিতমানস পুঁথিও নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। ১৯১৩ সালে তিনি এই পুঁথিটি আবিষ্কার করেন এবং ১৯১৫ সালে “রামচরিতম্” নামে প্রকাশ করেন।
  • গৌতম বুদ্ধের জীবনী: গৌতম বুদ্ধের জীবনী নিয়ে লেখা বিভিন্ন পুঁথিও নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
  • বৌদ্ধ দর্শন ও ধর্মগ্রন্থ: বৌদ্ধ দর্শন ও ধর্মগ্রন্থ নিয়ে লেখা বিভিন্ন পুঁথিও নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
  • হিন্দু ধর্মগ্রন্থ: হিন্দু ধর্মগ্রন্থ নিয়ে লেখা বিভিন্ন পুঁথিও নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
  • সংস্কৃত সাহিত্য: সংস্কৃত সাহিত্যের বিভিন্ন পুঁথিও নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর নেপাল থেকে সংগৃহীত পুথিগুলি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছে।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ আবিষ্কার করেন কবে?

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ আবিষ্কার করেন ১৯০৭ সালে। তিনি তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণের সময় চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি আবিষ্কার করেন। এই পুঁথিতে চর্যাপদের ৪৬টি পূর্ণাঙ্গ ও একটি খণ্ডিত পদ পাওয়া যায়।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ আবিষ্কারের পর ১৯১৬ সালে “হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে প্রকাশ করেন। এই প্রকাশনা বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।

চর্যাপদ হল বাংলা ভাষা ও সঙ্গীতের প্রাচীনতম নিদর্শন। এই পদগুলি ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব ও দর্শনের পাশাপাশি বাংলা ভাষার প্রাচীন ধ্বনি, শব্দভান্ডার ও বাক্যগঠনের নিদর্শন পাওয়া যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *