দৈনিক সংগ্রাম

দৈনিক সংগ্রাম হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা ভাষার জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র। সাইমুম সিরিজের লেখক আবুল আসাদ পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দৈনিক সংগ্রাম বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সংবাদের সাথে সাথে স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিষয়সমূহ প্রকাশ করে। একইসাথে এটি বিনোদন, ব্যবসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, খেলাধুলা, চলচ্চিত্র, ভ্রমণ, চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, মানবাধিকার এবং অন্যান্য সংবাদও সরবরাহ করে। মতাদর্শগত দিক থেকে এটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষের দৈনিক বা মুখপত্র হিসেবে পরিচিত।

পত্রিকাটির ইতিহাস

দৈনিক সংগ্রাম ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। প্রথম প্রকাশের পর থেকেই দৈনিক সংগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক সংবাদপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পত্রিকাটি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষের মতাদর্শ প্রকাশ করে।

পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক

বর্তমানে দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক হলেন আবুল আসাদ। তিনি একজন জনপ্রিয় লেখক এবং সাংবাদিক। তিনি সাইমুম সিরিজের জনপ্রিয় লেখক হিসেবে পরিচিত।

পত্রিকার প্রকাশনা

দৈনিক সংগ্রাম ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি সাপ্তাহিক ছয় দিন প্রকাশিত হয়। সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। প্রতিদিনের পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধ “সংগ্রামের সপ্তাহ” শিরোনামে প্রকাশিত হয়।

পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ

দৈনিক সংগ্রামের একটি অনলাইন সংস্করণ রয়েছে। পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে দৈনিক প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি অন্যান্য সংবাদ ও তথ্যও প্রকাশিত হয়।

পত্রিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

দৈনিক সংগ্রামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ ও বিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ ও তথ্য পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে পাঠকদেরকে অবহিত করা।

দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকের নাম কি?

২০২৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর পর্যন্ত, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকের নাম আবুল আসাদ। তিনি একজন জনপ্রিয় লেখক এবং সাংবাদিক। তিনি সাইমুম সিরিজের জনপ্রিয় লেখক হিসেবে পরিচিত।

পত্রিকার বিবরণ

পত্রিকা হল একটি লিখিত প্রকাশনা যার মধ্যে থাকে বর্তমান ঘটনা, তথ্যপূর্ণ নিবন্ধ, সম্পাদকীয়, বিভিন্ন ফিচার এবং বিজ্ঞাপন। এটি সাধারণত সাধারণত স্বল্প-মূল্যের কাগজে মুদ্রিত করা হয় যেমন নিউজপ্রিন্ট। পৃথিবীর আধুনিক বিপ্লব ও সংগ্রামের ইতিহাসে পত্রিকার ভূমিকা অনেক।

পত্রিকার বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

    • দৈনিক পত্রিকা: দৈনিক পত্রিকাগুলি প্রতিদিন প্রকাশিত হয় এবং সর্বশেষ সংবাদ ও তথ্য সরবরাহ করে।
    • সাপ্তাহিক পত্রিকা: সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলি প্রতি সপ্তাহে একবার প্রকাশিত হয় এবং সাপ্তাহিক ঘটনা ও বিষয়গুলির প্রতিবেদন করে।
    • পাক্ষিক পত্রিকা: পাক্ষিক পত্রিকাগুলি প্রতি মাসে একবার প্রকাশিত হয় এবং নির্দিষ্ট বিষয়গুলির উপর ফোকাস করে।
    • মাসিক পত্রিকা: মাসিক পত্রিকাগুলি প্রতি মাসে একবার প্রকাশিত হয় এবং সাধারণত সাময়িকী বা ম্যাগাজিন হিসাবে পরিচিত।
    • ত্রৈমাসিক পত্রিকা: ত্রৈমাসিক পত্রিকাগুলি প্রতি তিন মাসে একবার প্রকাশিত হয়।
    • ষান্মাসিক পত্রিকা: ষান্মাসিক পত্রিকাগুলি প্রতি ছয় মাসে একবার প্রকাশিত হয়।
    • বাৎসরিক পত্রিকা: বাৎসরিক পত্রিকাগুলি প্রতি বছর একবার প্রকাশিত হয়।

পত্রিকাগুলির বিভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

    • সংবাদ প্রচার: পত্রিকাগুলি সর্বশেষ সংবাদ ও তথ্য প্রচার করে।
    • অবহিতকরণ: পত্রিকাগুলি পাঠকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করে।
    • শিক্ষা: পত্রিকাগুলি পাঠকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেয়।
    • বিনোদন: পত্রিকাগুলি পাঠকদের বিনোদন প্রদান করে।

পত্রিকাগুলির বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

    • সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়া: পত্রিকাগুলি পাঠকদেরকে সর্বশেষ সংবাদ ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত করে।
    • বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন: পত্রিকাগুলি পাঠকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে।
    • বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি জানা: পত্রিকাগুলি পাঠকদেরকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে সাহায্য করে।
    • বিনোদন পাওয়া: পত্রিকাগুলি পাঠকদের বিনোদন প্রদান করে।

পত্রিকাগুলির কিছু অসুবিধাও রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

    • পক্ষপাত: পত্রিকাগুলি প্রায়শই পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে।
    • ভুল তথ্য: পত্রিকাগুলিতে ভুল তথ্য থাকতে পারে।
    • অপর্যাপ্ত তথ্য: পত্রিকাগুলিতে প্রায়শই অপর্যাপ্ত তথ্য থাকে।

পত্রিকাগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার। এগুলি পাঠকদেরকে সর্বশেষ সংবাদ ও তথ্য, বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান এবং বিনোদন প্রদান করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পত্রিকার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পত্রিকাগুলো যুদ্ধের খবর ছড়িয়ে দেওয়া, জনমত গঠন করা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • সাপ্তাহিক জয়বাংলা
  • সাপ্তাহিক মুক্তিযোদ্ধা
  • সাপ্তাহিক সংগ্রাম
  • দৈনিক সংগ্রাম
  • দৈনিক গণমুক্তি

এই পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি, মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব এবং যুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টির জন্য কাজ করেছিল। তারা পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • দৈনিক ইত্তেফাক
  • দৈনিক পাকিস্তান
  • দৈনিক আজাদ
  • দৈনিক ইংলিশম্যান

এই পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধের খবর ছড়িয়ে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।

পত্রিকাগুলোর ভূমিকা নিম্নরূপ:

  • যুদ্ধের খবর ছড়িয়ে দেওয়া: পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধের খবর ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের বাস্তবতা জনগণের কাছে তুলে ধরেছিল। এতে জনগণ যুদ্ধের প্রতি আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছিল।
  • জনমত গঠন করা: পত্রিকাগুলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করেছিল।
  • আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়: পত্রিকাগুলো আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য চাপ সৃষ্টি হয়েছিল।

মোটকথা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পত্রিকার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পত্রিকাগুলো যুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন, আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় এবং যুদ্ধের বাস্তবতা তুলে ধরে যুদ্ধের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

দৈনিক সংগ্রাম – ১৯৭১ সাল ডিজিটাইজেশান

দৈনিক সংগ্রামের ১৯৭১ সালের সকল সংবাদপত্র ডিজিটাইজ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং দৈনিক সংগ্রামের যৌথ উদ্যোগে করা হয়েছে। ডিজিটাইজেশন প্রকল্পটি ২০১৯ সালে শুরু হয় এবং ২০২২ সালে শেষ হয়।

ডিজিটাইজেশন প্রকল্পের মাধ্যমে দৈনিক সংগ্রামের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত সকল সংবাদপত্র ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর করা হয়েছে। এতে মোট ১১৫২টি সংবাদপত্র রয়েছে।

ডিজিটাইজড সংবাদপত্রগুলি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। এছাড়াও, দৈনিক সংগ্রামের ওয়েবসাইটেও ডিজিটাইজড সংবাদপত্রগুলি পাওয়া যায়।

ডিজিটাইজেশন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়েছে। এটি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

ডিজিটাইজেশন প্রকল্পের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিম্নরূপ:

  • প্রকল্পটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং দৈনিক সংগ্রামের যৌথ উদ্যোগে করা হয়েছে।
  • প্রকল্পটি ২০১৯ সালে শুরু হয় এবং ২০২২ সালে শেষ হয়।
  • প্রকল্পের মাধ্যমে দৈনিক সংগ্রামের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত সকল সংবাদপত্র ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর করা হয়েছে।
  • ডিজিটাইজড সংবাদপত্রগুলি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।
  • এছাড়াও, দৈনিক সংগ্রামের ওয়েবসাইটেও ডিজিটাইজড সংবাদপত্রগুলি পাওয়া যায়।

ডিজিটাইজেশন প্রকল্পটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

ডিজিটাল আইনের মামলায় দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক

দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আসামি। ২০২৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত একটি সংবাদে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কাদের মোল্লাকে “শহীদ” উল্লেখ করা হয়েছিল। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আফজাল বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্ত শেষে গত ১৫ই ডিসেম্বর আবুল আসাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তিনি আদালতে হাজির হন এবং জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

আবুল আসাদকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। এই ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা বিপুল অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

আবুল আসাদের গ্রেপ্তার এবং মামলায় সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই মামলাটি সরকারের পক্ষ থেকে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে দমনের একটি প্রয়াস।

আবুল আসাদের পক্ষ থেকে আইনজীবীরা বলেছেন, তিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে স্বাধীনভাবে তথ্য প্রচার করার অধিকার রাখেন। তিনি কোনো অপরাধ করেননি। তাই মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *