বাংলা ভাষা কাকে বলে
বাংলা ভাষার ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে বাংলা ভাষার প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায়। সেই সময় বাংলা ভাষা ছিল মাগধী প্রাকৃতের একটি উপভাষা। পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার বিকাশ ঘটে এবং এটি একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বাংলা ভাষার লিখন পদ্ধতি হল বাংলা লিপি। বাংলা লিপিটি হল একটি বর্ণমালা লিপি, যাতে ২৫টি বর্ণ রয়েছে।
বাংলা ভাষার সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে মহাকাব্য, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি।
বাংলা ভাষার ব্যবহারক্ষেত্র অত্যন্ত বিস্তৃত। বাংলা ভাষা বাংলাদেশে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকা, নেপালের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং ভুটানের কিছু অংশে বাংলা ভাষা প্রচলিত।
বাংলা ভাষা একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভাষা। এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বাংলা ভাষাকে “বাঙলা ভাষা” বা “বাঙ্গালা ভাষা”ও বলা হয়।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা হল একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ৬০০ সালের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষার প্রধান নিদর্শন হল বৈদিক সাহিত্য, যা ঋগ্বেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ এবং অথর্ববেদ নিয়ে গঠিত।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল:
- এই ভাষায় একটি সুস্পষ্ট স্বরবর্ণ ব্যবস্থা ছিল, যার মধ্যে ৫টি স্বরবর্ণ ছিল।
- এই ভাষায় একটি বহুবাক্যী ব্যাকরণ ছিল।
- এই ভাষায় একটি সক্রিয়-কর্ম-কর্মধারক বাক্যের গঠন ছিল।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলির বিবর্তন ঘটে। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি, অসমীয়া, নেপালি ইত্যাদি আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলি প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শন হল:
- ঋগ্বেদ: প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন হল ঋগ্বেদ। এটি একটি সংস্কৃত গ্রন্থ, যা দেবতাদের প্রশস্তিতে রচিত হয়েছে।
- সামবেদ: সামবেদ হল একটি সংস্কৃত গ্রন্থ, যা গান ও মন্ত্র দিয়ে রচিত।
- যজুর্বেদ: যজুর্বেদ হল একটি সংস্কৃত গ্রন্থ, যা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- অথর্ববেদ: অথর্ববেদ হল একটি সংস্কৃত গ্রন্থ, যা জাদু, ঔষধ এবং অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করে।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ভাষা থেকে আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলির বিবর্তন ঘটেছে, যা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রধান ভাষাগুলি।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা হল একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ থেকে ৬০০ সালের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষার প্রধান নিদর্শন হল প্রাকৃত সাহিত্য, যা বিভিন্ন প্রাকৃত ভাষায় রচিত।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল:
- এই ভাষায় একটি সুস্পষ্ট স্বরবর্ণ ব্যবস্থা ছিল, যার মধ্যে ৭টি স্বরবর্ণ ছিল।
- এই ভাষায় একটি বহুবাক্যী ব্যাকরণ ছিল।
- এই ভাষায় একটি সক্রিয়-কর্ম-কর্মধারক বাক্যের গঠন ছিল।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলির বিবর্তন ঘটে। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি, অসমীয়া, নেপালি ইত্যাদি আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলি মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শন হল:
- অশোক স্তম্ভলিপি: অশোক স্তম্ভলিপিগুলি হল খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর একটি প্রাকৃত ভাষার নিদর্শন।
- বৌদ্ধ ধর্মীয় সাহিত্য: বৌদ্ধ ধর্মীয় সাহিত্য, যা বিভিন্ন প্রাকৃত ভাষায় রচিত, মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
- জৈন ধর্মীয় সাহিত্য: জৈন ধর্মীয় সাহিত্য, যা বিভিন্ন প্রাকৃত ভাষায় রচিত, মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
- হর্ষচরিত: হর্ষচরিত হল একটি মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার সাহিত্যকর্ম, যা খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে রচিত হয়েছিল।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ভাষা থেকে আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষাগুলির বিবর্তন ঘটেছে, যা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রধান ভাষাগুলি।
মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষাকে কখনও কখনও “প্রাকৃত” নামেও উল্লেখ করা হয়। “প্রাকৃত” শব্দের অর্থ হল “স্বাভাবিক” বা “প্রাকৃতিক”। মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষাগুলি তখনকার সময়ের কথ্য ভাষাগুলির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল।